Sukher Khamar Farm House
10 Jun 2024
04 Jun 2025
৭ জুন শনিবার পালিত হবে ঈদুল আজহা – কোরবানির ঈদ। এ সময় অনেকেই কোরবানির পশু কেনার জন্য হাটে যান, তবে তাদের অধিকাংশেরই দরদাম বা পশু নির্বাচনের তেমন অভিজ্ঞতা থাকে না। যেহেতু বছরে একবারই এই ঈদে পশু কেনার প্রয়োজন হয়, তাই একটু সচেতন না হলে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। সঠিক কিছু বিষয় মাথায় রাখলে ভালো ও স্বাস্থ্যকর পশু নির্বাচন করা সম্ভব।
বর্তমানে কোরবানির হাট ছাড়াও অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে গরু কেনাবেচার প্রবণতা বেড়েছে। অনেকেই আবার সরাসরি খামার থেকে গরু কিনছেন। ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন খামারে ইতিমধ্যে ভিড়ও দেখা যাচ্ছে। হাট বা খামার – যেখান থেকেই গরু কেনা হোক না কেন, কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অধিকাংশ মানুষ মোটা-তাজা ও চর্বিযুক্ত গরু পছন্দ করেন, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত চর্বি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়। এসব পশুর চর্বিতে ‘খারাপ কোলেস্টেরল’ থাকে যা হৃৎপিণ্ডে ব্লক সৃষ্টি করতে পারে। তাই কম চর্বিযুক্ত ও স্বাস্থ্যকর গরু কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ।
গবেষণায় দেখা গেছে, হরমোন প্রয়োগে মোটা করা পশুর মাংস খেলে ব্রেস্ট, কোলন ও ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। যদিও বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত মোটাতাজাকরণের পদ্ধতি রয়েছে, অনেক খামারি লাভের আশায় অনৈতিকভাবে স্টেরয়েড ও হরমোন ব্যবহার করে থাকেন। যদিও বর্তমানে সচেতনতা বেড়েছে এবং এ ধরনের অনিয়ম কিছুটা কমেছে, তবুও সতর্ক থাকা জরুরি।
১. চটপটে আচরণ – সুস্থ গরু সাধারণত চটপটে হয়, চোখে চাহনি তীক্ষ্ণ থাকে, প্রাকৃতিকভাবে চলাফেরা করে।
২. ঝিম ধরা নয় – স্টেরয়েড খাওয়া গরু অলস ও ঝিম ধরা থাকে।
3. পা ও মুখে ক্ষত নেই তো? – লেজ, শিং, মুখ, ক্ষুর, গোড়ালি ও জিহ্বা পরীক্ষা করে দেখুন কোনো কাটাছেঁড়া আছে কি না।
4. নাক ভেজা থাকা – গরুর নাক যদি আর্দ্র থাকে, তাহলে বুঝবেন এটি সুস্থ।
5. খাবারের প্রতি আগ্রহ – খাবার দিলে সঙ্গে সঙ্গেই যদি মুখে নেয়, তবে এটি সুস্থতার লক্ষণ।
6. কুঁজ ও পাঁজর দেখা – গরুর কুঁজ যদি টানটান ও শক্ত থাকে এবং পাঁজরের হাড়ের মাঝে স্বাভাবিক গর্ত দেখা যায়, তাহলে সেটি সাধারণত স্বাস্থ্যবান হয়।
7. চামড়ার নিচে পাঁজর স্পষ্ট – অতিরিক্ত মোটা গরুর ক্ষেত্রে পাঁজর বোঝা যায় না, অথচ সুস্থ গরুর ক্ষেত্রে কিছুটা বোঝা যায়।
8. জাবর কাটা – গরু যদি মুখে জাবর কাটে, তবে এটি ভালো লক্ষণ।
গরু কেনার সময় শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, তার স্বাস্থ্যগত দিকটিও বিবেচনায় রাখা জরুরি। মনে রাখবেন, কোরবানির মূল শিক্ষা আত্মত্যাগ, তাই মাংসের পরিমাণ নয় বরং সুস্থ ও হালাল পশু নির্বাচনই হওয়া উচিত অগ্রাধিকার।